চীনের হিউম্যানয়েড রোবট নিয়ে বিতর্কের পেছনের বাস্তবতা

প্রকাশ: সোমবার, ০৯ জুন, ২০২৫
https://www.techvoice24.com/assets/images/logoIcon/logo.png টেকভয়েস২৪  ডেস্ক
https://www.techvoice24.com/assets/images/logoIcon/logo.png
  ছবি: সংগৃহীত
হিউম্যানয়েড বা মানবাকৃতির রোবট-এ শব্দ এখন আর শুধুই কল্পবিজ্ঞান নয়। চীনে এই প্রযুক্তি দ্রুত বাস্তব রূপ নিচ্ছে। তবে প্রশ্ন উঠেছে, এ রোবটগুলো কি মানুষের কাজ কেড়ে নেবে?

চীনের বিভিন্ন কারখানায় হিউম্যানয়েড রোবট স্থাপন নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে বিতর্ক চলেছে। অনেকেই আশঙ্কা করছেন, এতে ব্যাপক বেকারত্ব তৈরি হতে পারে। কিন্তু চীনা কর্তৃপক্ষের বক্তব্য এই ধারণার বিপরীত।

কী বলছে চীনা প্রযুক্তিকেন্দ্র?
বেইজিং অর্থনৈতিক-প্রযুক্তিগত উন্নয়ন অঞ্চলের উপপরিচালক লিয়াং লিয়াং স্পষ্ট করে বলেন,  “হিউম্যানয়েড রোবট আমাদের প্রতিস্থাপন করতে নয়, সহায়তা করতেই তৈরি হচ্ছে।”

তার ভাষায়, রোবট কারখানার উৎপাদনশীলতা বাড়াবে এবং এমন সব পরিবেশে কাজ করবে, যেখানে মানুষের কাজ করা ঝুঁকিপূর্ণ। উদাহরণ হিসেবে মহাকাশ, গভীর সমুদ্র এবং মধ্যরাতের উৎপাদন কাজের কথা উল্লেখ করেন তিনি।

রোবট নেবে মানুষের কাজ? সত্যতা কতটা?
চীনা কর্মকর্তারা দাবি করছেন, রোবটগুলো এমন সব কাজেই ব্যবহৃত হবে যা মানুষ করতে চায় না কিংবা নিরাপত্তার কারণে পারেও না। ফলে এগুলোর ব্যবহার মানুষের চাকরি হরণ নয়, বরং দক্ষতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দিকেই যাচ্ছে।

রোবট ম্যারাথন: প্রতিযোগিতা নয়, সহাবস্থান
প্রযুক্তির এই পথচলায় চীন আয়োজন করেছে বিশ্বের প্রথম রোবট হাফ-ম্যারাথন। এই ইভেন্টে মানুষ ও রোবট আলাদা আলাদা ট্র্যাকে দৌড়ায়-একদিকে মানুষ, অন্যদিকে ২০টি দল দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হিউম্যানয়েড রোবট।

এই প্রতিযোগিতায় চীনের ‘এক্স-হিউম্যানয়েড’ প্রতিষ্ঠানের তৈরি ‘তিয়ানগং’ রোবট বিজয়ী হয়। এর ক্রীড়াকেন্দ্রিক আলট্রা মডেল সর্বোচ্চ ১২ কিলোমিটার গতিতে দৌড়াতে সক্ষম।

উদ্যোক্তাদের ভাষায়, এই ম্যারাথনের মাধ্যমে মানুষ ও মেশিনের সহাবস্থানের ভবিষ্যৎকে তুলে ধরা হয়েছে, প্রতিস্থাপন নয়।

ভবিষ্যতের দিকে চীনের দৃষ্টি
চীন সরকার রোবট শিল্পে বিপুল বিনিয়োগ করছে। লক্ষ্য-কম খরচে, ব্যবহারকারীবান্ধব এবং উন্নত প্রযুক্তির রোবট তৈরি করা। লিয়াং বলেন,  “রাতের বেলা যখন মানুষ বিশ্রাম নেয়, তখন রোবট কাজ চালিয়ে যেতে পারে। এতে উৎপাদন ব্যয় কমবে এবং মানও বাড়বে।”

 ভয় নয়, দায়িত্বশীল গ্রহণযোগ্যতা
চীনের হিউম্যানয়েড রোবট প্রযুক্তি নিয়ে উদ্বেগের পাশাপাশি আশাবাদও আছে। বাস্তবতা হলো-এই রোবটগুলো এখনো এমন পর্যায়ে নেই, যাতে তারা পুরোপুরি মানুষের বিকল্প হয়ে উঠতে পারে। বরং এখনই সময়, প্রযুক্তিকে দায়িত্বশীলভাবে গ্রহণ করে তা কীভাবে মানবজীবনের উন্নয়নে কাজে লাগানো যায়, সেই পথে হাঁটার। সূত্র: রয়টার্স
image

আপনার মতামত দিন