মিস্ট্রালের ম্যাজিস্ট্রাল: ইউরোপের প্রথম যুক্তিভিত্তিক এআই মডেল

প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ১২ জুন, ২০২৫
https://www.techvoice24.com/assets/images/logoIcon/logo.png টেকভয়েস২৪  ডেস্ক
https://www.techvoice24.com/assets/images/logoIcon/logo.png
  ছবি: সংগৃহীত
এআই প্রযুক্তির প্রতিযোগিতায় যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের আধিপত্যের মাঝে ইউরোপও এবার নিজের শক্ত অবস্থান তৈরি করছে। ফ্রান্সের স্টার্টআপ মিস্ট্রাল সম্প্রতি উন্মোচন করেছে ইউরোপের প্রথম রিজনিং (যুক্তিভিত্তিক) এআই মডেল, যা শুধু তথ্যই দেয় না, বরং কীভাবে সে সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে, তা ব্যাখ্যা করতেও সক্ষম।

রিজনিং মডেল কী এবং কেন তা গুরুত্বপূর্ণ?
আজকের অধিকাংশ এআই মডেল বড় ডেটাসেট এবং বিশাল কম্পিউটিং শক্তির ওপর নির্ভর করে কাজ করে। কিন্তু এতে যুক্তির সুস্পষ্ট ব্যাখ্যার ঘাটতি থাকে। রিজনিং মডেল, বিশেষ করে Chain-of-Thought (CoT) পদ্ধতিতে কাজ করে, যেখানে প্রতিটি চিন্তাপ্রক্রিয়ার ধাপ বিস্তারিতভাবে উপস্থাপন করা হয়।  এটি এমন এক ধারা, যা এআইকে কেবল তথ্যদাতা নয়, সহযোগী চিন্তাবিদে রূপ দেয়।

ম্যাজিস্ট্রাল: দুটি ভিন্ন মডেল
মিস্ট্রালের নতুন লাইনআপে রয়েছে দুটি মডেল:
        >> Magistral Small (ওপেন সোর্স)
        >> Magistral Medium (বাণিজ্যিক গ্রাহকদের জন্য)।

Magistral Small এখন হাগিং ফেস (Hugging Face) প্ল্যাটফর্মে উন্মুক্তভাবে ডাউনলোডযোগ্য এবং এটি ইংরেজি, ফরাসি, স্প্যানিশ, আরবি ও সরলীকৃত চীনা ভাষায় যুক্তিভিত্তিক উত্তর দিতে সক্ষম।

উরোপের উত্তর: গোপন নয়, উন্মুক্ততা
মিস্ট্রাল শুরু থেকেই ওপেন সোর্স নীতির ওপর জোর দিচ্ছে। তারা মনে করে, এআই প্রযুক্তি শুধু গুটিকয়েক করপোরেশনের হাতে সীমাবদ্ধ থাকা উচিত নয়। এমন অবস্থানে তারা ওপেনএআই ও গুগলের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোর গোপন সফটওয়্যারের বিরুদ্ধে একটা বিকল্প তৈরি করেছে। এমনকি ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ-ও মিস্ট্রালের প্রচেষ্টায় সমর্থন দিয়েছেন।


মিস্ট্রালের লক্ষ্য কী?
মানব চিন্তা একরৈখিক নয়, তা যুক্তি, অন্তর্দৃষ্টি, অনিশ্চয়তা ও আবিষ্কারের সমন্বয়ে গঠিত। এই দৃষ্টিভঙ্গিই মিস্ট্রালের রিজনিং মডেলের ভিত্তি। তারা এআইকে এমন এক স্তরে নিয়ে যেতে চায়, যেখানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মানুষের চিন্তার গভীরতা অনুকরণ করতে পারে।

প্রতিযোগিতার মাঠে মিস্ট্রালের অবস্থান
মিস্ট্রালের বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় ৬২০ কোটি ডলার। ওপেনএআই, গুগল, ডিপসিক, এবং মেটার মতো প্রতিষ্ঠানের পাশে তারা এখনো তুলনামূলক ছোট, তবে রিজনিং মডেল উন্নয়নের ক্ষেত্রে তাদের ভূমিকা ইউরোপের জন্য একটি বড় পদক্ষেপ।

বিশেষ করে যখন বড় কোম্পানিগুলো মডেল বড় করার পথেই সীমাবদ্ধ, তখন ছোট স্টার্টআপগুলো নতুন আইডিয়া দিয়ে টিকে থাকার জায়গা তৈরি করছে।

এআইয়ের ভবিষ্যৎ কি যুক্তিবান হবে?
রিজনিং মডেল এআই প্রযুক্তিকে আরও ব্যাখ্যাযোগ্য ও বিশ্বাসযোগ্য করে তুলছে। এটাই হতে পারে ভবিষ্যতের মূল ধারা, যেখানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা শুধু "কী" বলছে, তা নয়, বরং কেন ও কিভাবে বলছে, সেটাও আমরা বুঝতে পারব।

ইউরোপীয় প্রযুক্তির এই নবজাগরণ কি ওপেনএআই ও গুগলের একচেটিয়া আধিপত্যে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিতে পারবে? সময়ই বলে দেবে। সূত্র: রয়টার্স
image

আপনার মতামত দিন