বেসিসের কার্যনির্বাহী পরিষদে যেমন প্রার্থী আসতে হবে

টেকভয়েস২৪ রিপোর্ট:: যেকোন সংগঠনের নির্বাচন মানেই সদস্যদের আগ্রহের কেন্দ্রে থাকে কারা হবেন নতুন মেয়াদে কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য। নির্বাচনকে ঘিরে সদস্যদের মধ্যে শুরু হয় নানান আলোচনা-সমালোচনা। তথ্যপ্রযুক্তি খাতের শীর্ষ বাণিজ্য সংগঠন হিসেবে বেসিসের সদস্যরা এর থেকে পিছিয়ে নেই। বেসিস নির্বাচন নিয়ে বরাবরের মতো এবারও তথ্যপ্রযুক্তি খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের আগ্রহের শেষ নেই।

বেসিস নির্বাচনে কেমন প্রার্থী আসা উচিত, বেসিসের সক্রিয় সদস্য হিসেবে কার্যনির্বাহী পরিষদের নেতাদের কাছে কেমন নেতৃত্ব আশা করেন এসব বিষয় নিয়ে কথা হয় বেসিস সদস্য ও জেটটেক পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ সামিউল ইসলামের সঙ্গে।

একজন সাধারণ সদস্য হিসেবে আপনি এবারের নির্বাচনে কেমন প্রার্থী প্রত্যাশা করেন? জানতে চাইলে বেসিসের সক্রিয় সদস্য মোহাম্মদ সামিউল ইসলাম বলেন, একজন সাধারণ সদস্য হিসেবে আমি এমন ব্যক্তিদের প্রার্থী হিসেবে প্রত্যাশা করি, যারা সফটওয়্যার ব্যবসার সাথে সরাসরি যুক্ত ও দীর্ঘদিন ধরে এই সেক্টরে ব্যবসা করছেন। কেননা তারা তাদের ব্যবসার অভিজ্ঞতা দিয়ে আমাদের সাধারণ সদস্যদের দুঃখ-কষ্ট, ব্যবসার সমস্যা ও চ্যালেঞ্জগুলো ভাল করে উপলব্ধি করতে সক্ষম হবে।

সেসঙ্গে যারা বেসিসের সদস্যদের সার্বিক কল্যাণে কাজ করার জন্য নিরপেক্ষভাবে চিন্তা করবেন, ব্যক্তি হিসেবে সৎ হবেন, অন্তর দিয়ে বেসিসের সার্বিক উন্নয়নের কথা ভাববেন, নিজের ব্যবসার কথা না ভেবে সব সদস্যদের কল্যাণের কথা চিন্তা করবেন। যারা জানেন বেসিস সংগঠনটি আসলে কী, কেনো ও কোন লক্ষ্য নিয়ে বেসিস সংগঠনটা গঠিত হয়েছিল, কারা ছিলেন প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য এবং সমস্ত বিষয়গুলো হৃদয়ে ধারণ করবেন। এসব বিষয়ে যদি কারো স্পষ্ট ধারণা না থাকে, তাহলে তিনি কার্যনির্বাহী কমিটিতে এসে সদস্যদের জন্য কি কাজ করবেন? সংগঠনের উন্নতিতে ও সদস্যদের কল্যাণে কী অবদান রাখবেন? আর যারা উপরের বিষয়গুলো হৃদয়ে ধারণ করবেন, সে যে প্যানেলেরই হোক না কেনো আমি তাকেই প্রার্থী হিসেবে প্রত্যাশা করি।

বেসিসের নতুন কার্যনির্বাহী পরিষদের জন্য কেমন নেতা আসা উচিত বলে মনে করেন? জবাবে জেটটেক পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, একটা বাণিজ্য সংগঠেনের নেতাদের বিভিন্ন ধরনের দায়িত্ব থাকে। বেসিস হলো আমাদের সফটওয়্যার ইন্ডাস্ট্রির প্রাণের সংগঠন। তাই কার্যনির্বাহী পরিষদের নেতাদের কাছে আমাদের প্রত্যাশাটাও একটু বেশি থাকে। যেমন, বিভিন্ন সময় সদস্যরা ব্যবসা সংক্রান্ত নানান সমস্যায় পড়েন। তখন সদস্যদের সেসব সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া বেসিসের নেতাদের দায়িত্বে এসে যায়। যারা নেতা হিসেবে আসবেন তারা যাতে এসব ক্ষেত্রে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে সক্ষম হন এবং প্রয়োজনীয় সমস্যার সমাধান করতে পারেন। আমি মন থেকে চাই যারা সততা ও আন্তরিকতা দিয়ে ডেডিকেটেডলি কাজ করবেন, তারাই নেতৃত্বে আসুক। কার্যকরী পরিষদে সদস্যদের কল্যাণে নেতাদের অনেক কাজ করতে হয়। সরকারের সঙ্গে পলিসি লেভেলে, দেশে ও আন্তজার্তিক বিভিন্ন কোম্পানির সঙ্গে কাজ করতে হয়। তাই আমি বলবো, যাদের সংগঠনের সদস্যদের কল্যাণে সময় দেওয়ার মানসিকতা রয়েছে, শুধু তারাই এই নতুন কার্যকরী পরিষদে নেতৃত্বে আসুক।

সংগঠনের নেতাদের অভিভাবকের সাথে তুলনা করে মোহাম্মদ সামিউল ইসলাম বলেন, কার্যনির্বাহী পরিষদের নেতারা হলেন একটা বাণিজ্যিক সংগঠনের অভিভাবকস্বরূপ। সংগঠনে যতজন সদস্য আছেন তারা হলেন সকলের প্রতিনিধি। সফটওয়্যার ইন্ডাস্ট্রিতে সদস্যদের ভাল মতো ব্যবসা করার সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশ তৈরিতে তারা হবেন অগ্রপথিক। ব্যবসায়ীদের ব্যবসা করার জন্য প্রয়োজনীয় যেসব সুযোগ-সুবিধা প্রয়োজন তারা যেনো সকলের প্রতিনিধি হয়ে দক্ষতার সাথে সরকারের কাছ থেকে সেগুলো আদায় করতে সক্ষম হন।

তিনি বলেন, মোট কথা যারা কার্যনির্বাহী পরিষদের নেতা হবেন তাদের সংগঠনের সদস্যদের সব সুবিধা-অসুবিধা, দুঃখ-কষ্টের কথা শুনার মানসিকতা থাকতে হবে। যেকোনো বিপদ-আপদের সময় সদস্যর পাশে দাঁড়াতে হবে। সদস্যদের কল্যাণে ও সংগঠনের উন্নয়নে কাজ করার মনোভাব থাকতে হবে। তাহলে সদস্যরা ভাল থাকবে। সদস্যদের ব্যবসা ভাল হলে সফটওয়্যার ইন্ডাস্ট্রিরও উন্নয়ন হবে।

নবীন-প্রবীণ মিলে কার্যনির্বাহী পরিষদ গড়ে উঠলে সেটি সংগঠনের জন্য ভাল হয় বলে মত দেন জেটটেক পিএলসির এই ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তিনি বলেন, ইন্ডাস্ট্রিতে দীর্ঘ দিন ধরে কাজ করছেন, সদস্যদের সাথে কাজ করার আন্তরিক ইচ্ছা রয়েছে এমন প্রবীণদের সংগঠনের নেতৃত্বে আসাটা জরুরি। তাদের ব্যবসা পরিচালনা ও ইন্ডাস্ট্রির অভিজ্ঞতা রয়েছে। অন্যদিকে, তরুণদেরও আসা দরকার। কেননা ইন্ডাস্ট্রিতে তরুণদের মধ্যেও অনেক মেধাবী, প্রতিভাবান, যোগ্য, নেতৃত্বদানকারী দক্ষ ব্যক্তি রয়েছেন। যাদের কোম্পানি ভাল করছে। ভাল একটা অবস্থান তৈরি করেছে। তাদের অর্জিত জ্ঞান, মেধা দিয়ে সংগঠনকে নতুন নেতৃত্ব দিতে পারে। নতুন ও পুরান মিলে কার্যনির্বাহী পরিষদ হলে নেতৃত্ব হবে আরও বেশি স্মার্ট।