‘রিফারবিশড ও কপি প্রোডাক্ট আইটি ইন্ডাস্ট্রি ও ব্যবসায়ীদের জন্য খুবই ক্ষতিকর’

উজ্জ্বল এ গমেজ

এনালগ সিস্টেমে একজন ক্যাবল টিভি অপারেটরের অধীনে কতজন সাবস্ক্রাইবার বা গ্রাহক আছে সেটা মনিটর করতে পারছে না সরকার। ডিস লাইনের সাহায্যে অনুষ্ঠান দেখার জন্য একজন গ্রাহককে ক্যাবল টিভি অপারেটরকে সার্ভিস চার্জ হিসাবে দিতে হচ্ছে ২০০-৫০০ টাকা। এই সার্ভিস চার্জের বিপরীতে অপারেটরের কাছ থেকে সরকার রাজস্ব হিসেবে ১৫% ভ্যাট পাওয়ার কথা। কিন্তু এনালগ সিস্টেম থাকার কারণে টেকনোলজির অভাবে সরকার যেহেতু মনিটরিং করতে পারে না, তাই পাঁচ কোটি গ্রাহক থাকা সত্ত্বেও রাজস্ব পায় নামমাত্র। ক্যাবল টিভিতে শুধু ডিজিটাল সিস্টেম না থাকার কারণে সরকার বড় ধরনের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সারাদেশের সব টিভি ডিজিটাল সিস্টেমের আওতায় আনতে পারলে প্রতি বছর সরকার শুধু ক্যাবল টিভি সেক্টর থেকে ২ হাজার কোটিরও বেশি টাকা রাজস্ব আয় করা সম্ভব।

সম্প্রতি রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডস্থ রাসা টেকনোলজিসের প্রধান কার্যালয়ে টেকভয়েস২৪ডটনেটের সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার ও প্লাস টেক ইন্ডাস্ট্রিস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশিস কুমার।

টেকভয়েস২৪: আইটি ইন্ডাস্ট্রির উন্নয়নে রাসা টেকনোলজিস কী ধরনের ভূমিকা রাখছে?
আশিস কুমার: দেখুন, ২০০৬ সাল থেকে শুরু করে দীর্ঘ ১৬ বছরে ধরে এই ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করছি। ইন্ডাস্ট্রিকে ভালোবেসে এর উন্নয়নে বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ নিয়েছি। এখনও নিচ্ছি। কতটা উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পেরেছি সেটা বুঝতে একটু পেছনে যেতে হবে। নেটওয়ার্ক বেইজড আইটি প্রোডাক্ট ও সল্যুশন সার্ভিস নিয়ে ব্যবসা শুরু করে রাসা টেকনোলজিস। বর্তমানে আমরা বিভিন্ন ধরনের নেটওয়ার্কিং, কম্পিউটার হার্ডওয়্যার ও আইটি রিলেটেড প্রোডাক্ট নিয়ে ব্যবসা করছি।

বিশ্বনন্দিত বেশ কিছু ব্র্যান্ডের নেটওয়ার্কিং ও আইটি প্রোডাক্টের দেশে ডিস্ট্রিবিউটর, পার্টনার এবং সল্যুশন প্রোভাইডার। সেসাথে ইন্টারনেট জগতেরও বিশ্বের বেশ কিছু নামি-দামি ব্র্যান্ডের প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করছি। দেশে কাস্টমারের চাহিদা অনুযায়ী আমরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রোডাক্ট ইম্পোর্ট, স্টক এবং সেগুলো ডিলারের মাধ্যমে ডিস্ট্রিবিউট করে থাকি। দেশের বিভিন্ন ব্যাংক, ডিফেন্স, সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে আমরা প্রয়োজন ও চাহিদামাফিক নেটওয়ার্কিং সল্যুশন সার্ভিস দেই। আমরা শুধু নেটওয়ার্কিং প্রোডাক্টই ইম্পোর্ট করি না, সেসাথে নেটওয়ার্কিং প্রোডাক্টের ইনস্টলেশন ও সল্যুশন সার্ভিস দেই।

২০০৯ সালেদেশে ডিজিটাল ক্যাবল টেলিভিশন বা ডিজিটাল টিভি হেড অ্যান্ড সল্যুশনকে আমরাই প্রথম বাণিজ্যিকভাবে ক্যাবল টিভি অপারেটরদের কাছে পরিচিত করাই। এরপর থেকে ধারাবাহিকভাবে এনালগ ক্যাবল টিভি অপারেটরদেরকে ডিজিটাল ক্যাবল টিভিতে রূপান্তরিত করাতে থাকি। এখন সারাদেশের সমস্ত ডিজিটাল ক্যাবল টিভি অপারেটরদের মধ্যে ৬০-৭০% ক্যাবল টিভি সিস্টেম আমাদের করা। সারাদেশে আড়াইশ ক্যাবল টিভি অপারেটর আছে।

তারমধ্যে দেড়শ’র বেশি অপারেটরকে ডিজিটাল সল্যুশন সেবা দিচ্ছে রাসা টেকনোলজিস। সারাদেশে পাঁচ কোটি টিভি রয়েছে। প্রত্যেকটা টিভিতে একটা করে সেট টববক্সের দরকার হবে। ২০১৪ সালে গ্রাহকদেরকে সুলভ মূল্যে মানসম্পন্ন সেট টববক্স দেয়ার জন্য প্রতিষ্ঠা করি প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রিস লিমিটেড। যেটা বাংলাদেশের প্রথম এবং একমাত্র সেট টববক্স মেনুফ্যাকচার কোম্পানি। সারাদেশের ডিজিটাল ক্যাবল টিভির অপারেটরদের আমরাই সেট টববক্স সরবারহ করে থাকি।

২০২১ সালে গাজীপুরে কালিয়াকৈর বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্ক সিটিতে ইন্ডিয়ান কোম্পানির পার্টনারশিপে ফাইবার ক্যাবল উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করি। আমরা এখন দেশে যৌথভাবে অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবল তৈরি করছি। এছাড়াও আমাদের আরেকটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান আছে, সেটি ওটিটি আইপি টিভি প্ল্যাটফর্ম। মোবাইল ও আইপি দিয়ে ইন্টারনেটের মাধ্যমে টিভি চ্যানেল, লাইভ অনুষ্ঠান, ভিডিও কনটেন্ট দেখার বাংলালিংকের যে আইপি টিভি ওটিটি টফি প্ল্যাটফর্ম আছে এর সমস্ত সল্যুশন আমরা দিচ্ছি। এছাড়াও রাসা টেকনোলজিস অন্যান্য সেবাও দিচ্ছে আইটি ইন্ডাস্ট্রিতে।

টেকভয়েস২৪: সারাদেশে পাঁচ কোটি টিভি গ্রাহক, তাহলে তো সরকার বিপুল পরিমাণে রাজস্ব পাচ্ছে…
আশিস কুমার: সরকার ইতিমধ্যে ক্যাবল টিভি সেক্টরকে ডিজিটালাইজড করার জন্য প্রাথমিক ঘোষণা দিয়েছে। আগামী এক থেকে দুই বছরের মধ্যে প্রত্যেকটা ক্যাবল টিভি অপারেটরকে ডিজিটাল সিস্টেমের আওতায় আনা সময়ের দাবি। আমি মনে করি, এর জন্য সরকারের পক্ষ থেকে আইন প্রয়োগের মাধ্যমে টিভি অপারেটরদের বাধ্য করলে এটা দ্রুত বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে।

এনালগ টিভি সিস্টেমে একজন ক্যাবল টিভি অপারেটরের অধীনে কতজন গ্রাহক আছে সেটা সরকারের পক্ষে মনিটরিং করা সম্ভব না। ডিসে টিভি দেখার জন্য একজন গ্রাহক ক্যাবল অপারেটরকে সার্ভিস চার্জ হিসাবে দিতে হচ্ছে ২০০-৫০০ টাকা। এই সার্ভিস চার্জের বিপরীতে টিভি অপারেটরের কাছ থেকে সরকার রাজস্ব হিসেবে ১৫% ভ্যাট পাওয়ার কথা। কিন্তু এনালগ সিস্টেম থাকার কারণে টেকনোলজির অভাবে সরকার যেহেতু মনিটরিং করতে পারে না, তাই পাঁচ কোটি গ্রাহক থাকা সত্ত্বেও রাজস্ব পায় নামমাত্র। ডিজিটাল সিস্টেম না থাকার কারণে সরকার বড় একটা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সারাদেশের সব টিভি ডিজিটাল সিস্টেমের আওতায় আনতে পারলে প্রতি বছর সরকার শুধু ক্যাবল টিভি সেক্টর থেকে ২ হাজার কোটিরও বেশি টাকা রাজস্ব আয় করতে পারবে।

টেকভয়েস২৪: আইটি ব্যবসায় চ্যালেঞ্জগুলো কী কী?
আশিস কুমার: আমি দীর্ঘদিনের ব্যবসার অভিজ্ঞতা থেকে বলব, আইটি ব্যবসার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো পরিবর্তিত টেকনোলজির সাথে নিজেকে অ্যাডাপ্ট, আপডেটেড ও আপগ্রেটেড করা। কেননা সময়ের সাথে সাথে টেকনোলজিও বদলায়। একজন ব্যবসায়ীকে সেই টেকনোলজির সাথে সাথে চলতে হয়। যুগের চাহিদা অনুসারে মানুষের যেসব টেকনোলজির প্রয়োজন, সেগুলোর সাথে অ্যাডাপ্ট করতে হয়।

টেকনোলজি সম্পর্কে পর্যাপ্ত জ্ঞান ও স্বচ্ছ ধারণা থাকতে হয়। আগামীতে কী ধরনের টেকনোলজি আসছে সে সম্পর্কেও ধারণা করতে হয়। নতুন টেকনোলজি নিয়ে সেই অনুসারে মানুষের সামনে উপস্থাপন করতে হয়। যারা নেটওয়ার্কিং আইটি প্রোডাক্ট নিয়ে ব্যবসা করে, তাদের মধ্যে এই দূরদর্শী চিন্তা-ভাবনা থাকতে হবে। না থাকলে যেকোন সময় ব্যবসায় ধস নামতে পারে।

আইটি ব্যবসায়ীদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে যেকোন সময় টেকনোলজি বদলে যায়। নতুন টেকনোলজি আসার কারণে পুরনো প্রোডাক্ট প্রায় অচল হয়ে যায়। দাম কমে যায়। দাম কমার ফলে ব্যবসায়ীকে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়। এই ব্যবসায় এটা অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ। এছাড়া অন্যান্য চ্যালেঞ্জের মধ্যে বৈশ্বিক বাজারে অস্থিরতা, ডলারের রেট বেড়ে যাওয়া ও মন্দা। ফলত সময়মতো এলসি ওপেন না করার কারণে আমরা চাহিদামাফিক প্রোডাক্ট আনতে পারছি না।

আমাদের মত বড় কোম্পানির বিক্রি কমে যাওয়ার কারণে কর্মীদের নিয়মিত বেতন-ভাতা দিতে বেগ পেতে হচ্ছে। ব্যবসা কমে গেলেও আমাদের যেসব কর্মী রয়েছে, চাইলেও তাদেরকে বাদ দিতে পারছি না। সেদিক থেকে এই সময়টা আমাদের জন্য একটা বড় চ্যালেঞ্জ। বর্তমানে বিশ্বে যে অস্থিরাবস্থা বিরাজ করছে, আশাকরছি শিগগিরই এটা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে। বৈশ্বিক সাপোর্ট এবং সরকারের আন্তরিক সহযোগিতায় এই চ্যালেঞ্জ আমরা দ্রুত কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হব। আশার কথা হলো, ইতিমধ্যে সরকার এসব সমস্যা কাটিয়ে উঠতে বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে। সেগুলো কার্যকর হলে এ সমস্যা দ্রুত কেটে যাবে বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস।

টেকভয়েস২৪: দেশে আইটি প্রোডাক্ট উৎপাদনের ক্ষেত্রে সরকারের ভূমিকা কেমন?
আশিস কুমার: দেশে আইটি ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তারা ব্যক্তি উদ্যোগে বিভিন্ন আইটি প্রোডাক্ট উৎপাদন করছে। একটা আইটি প্রোডাক্ট ম্যানুফ্যাকচার করার জন্য যে কম্পোনেন্ট, র-মেটেরিয়ালস প্রয়োজন হয়, সেগুলি বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। অন্যদিকে সরকার ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ নামে আইটি প্রোডাক্ট উৎপাদন করার কথা বলছে, কিন্তু আইটি প্রোডাক্ট উৎপাদন করার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে যে সাহায্য-সহযোগিতার প্রয়োজন, সেগুলো ঠিকঠাক দেয়া হচ্ছে না। একটা প্রোডাক্ট উৎপাদনের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে যে সুবিধাগুলো দেওয়ার কথা, সেগুলো প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম।

আইটি প্রোডাক্ট উৎপাদনে বিভিন্ন পর্যায়ে এসআরও বা টেরিফ সুনির্দিষ্ট ভাবে নির্ধারিত না। ফলে প্রোডাক্ট যে কাস্টমস হাউজের মাধ্যমে আমদানির করা হয়, সেখানে যারা দায়িত্ব পালন করেন তারাও তথ্যটা সঠিকভাবে জানে না। ফলে শুরু হয় অব্যবস্থপনা। সেসাথে একটা ইন্ডাস্ট্রি বা ফ্যাক্টরি করতে গেলে বিভিন্ন ধরনের লাইসেন্স করতে হয়।

পরিবেশ থেকে শুরু করে বাণিজ্যিক আমদানি, ইন্ডাস্ট্রিয়াল আরআইসি, বোর্ড অব ইনভেস্টমেন্ট, লাইসেন্সসহ বিভিন্ন ধরনের ইন্ডাস্ট্রিয়াল লাইসেন্স এবং পারমিশন নিতে হয়। এসব কার্যক্রম করতে একটা জটিল প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছে। কখনো কখনো সেটার সহজ সমাধান হয় না। এদিক থেকে যারা বাংলাদেশে আইটি প্রোডাক্ট ম্যানুফ্যাকচার করতে চায় তাদের জন্য এটা একটা বড় চ্যালেঞ্জ। এই ইস্যুতে সরকারের আরো আন্তরিক সহযোগিতা দরকার।

টেকভয়েস২৪: মার্কেটে গ্রে চ্যানেলে আসা ও কপি আইটি প্রোডাক্টে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কারা?
আশিস কুমার: দেশের বাইরে থেকে দুটি চ্যানেলে প্রোডাক্ট আসে। একটা অথরাইজড ডিস্ট্রিবিউটর চ্যানেল ও অপরটি গ্রে চ্যানেল। প্রথমটা যারা অফিসিয়াল বা অথরাইজড ডিস্ট্রিবিউটর তারা সরকারকে ভ্যাট-ট্যাক্স দিয়ে বিদেশ থেকে ম্যানুফকচারার বা অথরাইজড ডিস্ট্রিবিউটরের কাছ থেকে সরাসরি প্রোডাক্ট নিয়ে আসছে। এটা হচ্ছে আমদানির লিগ্যাল চ্যানেল। দ্বিতীয়টা হল, যারা আন অফিসিয়াল বা আন অথরাইজড ডিস্ট্রিবিউটর।

মার্কেটের চাহিদা এবং বেশি মুনাফার আশায় অন্য একটা দেশের ডিস্ট্রিবিউটরের কাছ থেকে প্রোডাক্ট কিনে আনে। তবে তারাও সরকারকে ভ্যাট-ট্যাক্স দিয়েই প্রোডাক্ট আনছে। দুটি চ্যানেলে আসা প্রোডাক্টই কিন্তু অরিজিনাল। গ্রে চ্যানেলে প্রোডাক্ট আনার জন্য সরকারের বা মার্কেটের কোন ক্ষতি হয় না। কিন্তু ক্রেতাদের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কারণ আন অথরাইজড চ্যানেলে আসা প্রোডাক্টের বিক্রয়োত্তর সেবা না পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

এবার আসি কপি প্রোডাক্টের বিষয়ে। ক্রেতারা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় ও প্রতারিত হয় কপি প্রোডাক্টে। মার্কেটে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী বেশি মুনাফার আশায় কপি প্রোডাক্ট আমদানি করে। অরিজিনাল প্রোডাক্টের তুলনায় কপি প্রোডাক্টের সার্ভিস টাইম অর্ধেক বা তারও কম হয়। কিছুদিন ব্যবহারের পর নানা ক্রটি দেখা দেয়। অফিসিয়াল ডিস্ট্রিবিউটরের তো সার্ভিস সেন্টার থাকে। কপি প্রোডাক্টের কোন সার্ভিস সেন্টার থাকে না। ফলে ক্রেতারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

অন্যদিকে অথরাইজড চ্যানেলের ডিস্ট্রিবিউটরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কারণ তার একটা প্রোডাক্টের জায়গায় একটা কপি প্রোডাক্ট ঢুকে যায়। সেসাথে ক্রেতা ভুল প্রোডাক্ট কিনে প্রতারিত হয়ে ওই ব্র্যান্ডের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলে। এতে অফিসিয়াল ডিস্ট্রিবিউটর ক্রেতা হারায়। ক্ষতি হয় সরকারেরও। দ্বিতীয়বার প্রোডাক্টটি আমদানি করতে দেশের টাকা বিদেশে যায়। কপি এবং রিফারবিশড প্রোডাক্ট আইটি ইন্ডাস্ট্রি ও রিয়েল ব্যবসায়ীদের জন্য খুবই ক্ষতিকর।

টেকভয়েস২৪: আইটি ব্যবসায়ী হিসেবে কেমন বাংলাদেশ দেখতে চান?
আশিস কুমার: আমি বলব ডিজিটাল বাংলাদেশের নেপথ্যের নায়ক হচ্ছেন আইটি ব্যবসায়ীরা। আমরা চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের যুগে আছি। এখন প্রত্যেকটা স্কুল-কলেজ, অফিস-আদালত, হাসপাতাল সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠানে ব্যবহার করা হচ্ছে অত্যাধুনিক টেকনোলজি। প্রতিদিনকার জীবনে নিত্যপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন সেবা নিতেও আইটি প্রোডাক্টের প্রয়োজন হচ্ছে। সঙ্গত কারণে এখন আইটি পণ্যের চাহিদা অনেক বেড়ে গেছে। বাংলাদেশ একটা সমৃদ্ধ আইটি প্রোডাক্টের মার্কেট রয়েছে। দিনদিন এটা বড় হচ্ছে।

আমাদের তরুণ প্রজন্ম অনেক মেধাবী ও আইটিপ্রেমী। তারা আইটিতে অভ্যস্ত হয়ে পড়ছে। দেশে প্রায় ১৮ কোটি জনগণ রয়েছে। এই জনগণের চাহিদা তুলনায় আমাদের দেশে আইটি ম্যানুফ্যাকচারার কোম্পানি খুবই কম। হাতে গোনা কয়েকটি কোম্পানি দেশে বিভিন্ন ধরনের আইটি প্রোডাক্ট উৎপন্ন করছে। আমি এমন একটা বাংলাদেশ দেখতে চাই যেখানে আমাদের নিত্যদিনের প্রয়োজনীয় সব আইটি প্রোডাক্ট দেশে ম্যানুফ্যাকচার হবে। দেশের চাহিদা মিটিয়ে আমরা একদিন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আমাদের প্রোডাক্ট রপ্তানি করব। দেশ হবে প্রযুক্তিরনির্ভর ও ডিজিটালাইজড। প্রত্যেকটা সেক্টর হবে স্মার্ট। এমন একটা স্মার্ট বাংলাদেশ দেখতে চাই।

image_printপোস্টটি প্রিন্ট করতে ক্লিক করুন...