চির নিদ্রায় শায়িত হলেন সিস্টার মেরী লিলিয়ান, এসএমআরএ। ২৪ জুন তিনি মারা যান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো প্রায় ৯৫ বছর বয়স।
জীবনদশায় তিনি বাংলাদেশ খ্রিষ্ট মণ্ডলীর জন্য নিবেদিত সমাজসেবী একনিষ্ঠ মানুষ ছিলেন। তার অনুপ্রেরণায় হাজারো নারী নিজের জীবনে আত্মনির্ভরশীল এবং আত্মউদ্যোগী হয়ে উঠেছেন।
তিনি একজন ব্রতধারিণী হয়েও চার দেয়ালের মধ্যে বন্দী না থেকে বৃহৎ কাজের নিমিত্তে নারীদের উন্নতির লক্ষ্যে ১৯৬৮ খ্রিষ্টাব্দে তেজগাঁয়ের জাগরণী হ্যান্ডিক্রাফট সেন্টার গড়ে তুলেন। এছাড়াও তিনি বোর্ড অব ট্রাস্টিজ কোর-দি জুট ওয়ার্কস আজীবন সদস্য ছিলেন ।
এই প্রতিষ্ঠানে বিশেষভাবে হস্তশিল্পের কাজ তথা পাটজাত দ্রব্যের মধ্য দিয়ে সৃজনশীল ভাবে কাজ করে দেশের অভ্যন্তরে এবং দেশের সীমানা অতিক্রম করে বহু প্রশংসা লাভ করেছেন, তিনি। ক্রমান্বয়ে তার কাজের মধ্য দিয়ে এবং সঠিক পরিকল্পনার বাস্তব রুপ প্রদান করে হাজারো নারী নিজেদের ভাগ্য উন্নয়ন ঘটিয়েছেন। এই হস্ত শিল্পের কাজ আজ ও হাজারো মানুষের কাছে স্বীকৃত।
উল্লেখ্য, ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের মুক্তিযুদ্ধ ও এর পরবর্তী ভয়ংকর ও তীব্র সংকটকালে এই জাগরণী কেন্দ্রটি আরো সম্প্রসারিত করার ফলে অনেক নারী আত্মনির্ভরশীল হওয়ার প্রয়াস পায় এবং তাদের পরিবারের আর্থিক সংকট কিছুটা কাটিয়ে উঠতে সাহস পান।
প্রয়াত সিস্টার মেরী লিলিয়ানের সাহচার্যে প্রায় ৬০০০ (ছয় হাজার জন) নারী বিভিন্নভাবে এই হস্ত শিল্পের প্রশিক্ষণ লাভ করেছেন। এই প্রতিষ্ঠানের প্রশিক্ষণের মধ্যে রয়েছে রঙ্গিন পাটসরঞ্জাম, টেরা কোট্টা সামগ্রী, ঝুড়ি , মোমবাতি, গহনা ইত্যাদি তৈরি করে বিশ্বের ৩০টির ও বেশি দেশে রপ্তানি করেছেন।
ব্রতীয় জীবনে নারীদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলার পিছনে তিনি বহু পরিশ্রম করেছেন। তার পুরস্কার হিসেবে তিনি প্রয়াত পুণ্যপিতা পোপ ফ্রান্সিস কর্তৃক Benemerenti পদক লাভ করেন।
প্রয়াত সিস্টার মেরী লিলিয়ান, এসএমআরএ সংঘের কাছে এবং বাংলাদেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে ঈশ্বর তার এই সেবিকাকে অনন্ত বিশ্রাম দান করুন। সূত্র: আরভিএ