গুগল ওয়ালেট আর পেপ্যাল-দুইটি নামই অনেক ব্যবহারকারীর জন্য দৈনন্দিন লেনদেনের নির্ভরযোগ্য অংশ। ফোন দিয়ে কফি কেনা হোক বা সাবস্ক্রিপশন ফি মেটানো-সবই হতো অনায়াসে। কিন্তু সেই অভ্যস্ততা এবার একটু ব্যাঘাত ঘটাতে চলেছে। গুগল ওয়ালেট থেকে বাদ পড়ছে পেপ্যাল। যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবহারকারীরা আর এই দুটি জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্মকে একসাথে ব্যবহার করতে পারবেন না।
জানা গেছে, অ্যাপ-ভিত্তিক লেনদেনের দুনিয়ায় বড় একটি পরিবর্তন আসছে। গুগল ওয়ালেট ব্যবহারকারীদের জন্য আগামী সপ্তাহ থেকে আর পেপ্যাল ব্যবহার করে অর্থ পরিশোধ করা যাবে না।
১৩ জুন থেকে বন্ধ হচ্ছে পেপ্যাল সাপোর্ট
গুগলের এক সময়কার সাপোর্ট পেজ অনুযায়ী, ১৩ জুন ২০২৫ থেকে গুগল ওয়ালেট অ্যাপে পেপ্যাল পেমেন্ট অপশন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবহারকারীরা তাঁদের পেপ্যাল অ্যাকাউন্ট গুগল ওয়ালেটের সঙ্গে আর লিংক করে ব্যবহার করতে পারবেন না। এমনকি আগে যুক্ত করা পেপ্যাল অ্যাকাউন্টগুলোও স্বয়ংক্রিয়ভাবে অ্যাপ থেকে সরিয়ে ফেলা হবে।
যদিও এই সাপোর্ট পেজটি পরে মুছে ফেলা হয়েছে, তবুও প্রযুক্তি সাইট Android Authority তাদের প্রতিবেদনে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
ব্যবহারকারীদের জন্য কী বদল আসছে?
এই পরিবর্তনের ফলে:
>>গুগল ওয়ালেট থেকে পেপ্যাল লেনদেনের ইতিহাস আর দেখা যাবে না।
>>পেমেন্ট হিস্টোরি দেখতে হলে ব্যবহারকারীদের পেপ্যাল ওয়েবসাইট বা অফিসিয়াল অ্যাপে যেতে হবে।
ব্যবহারকারীদের নতুন করে একটি ডিফল্ট পেমেন্ট মেথড সেট করতে হবে। গুগলের পক্ষ থেকে অন্তত একটি ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ড অ্যাকাউন্টে যোগ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
জার্মানিতে এখনো পেপ্যাল সমর্থিত
যদিও যুক্তরাষ্ট্রে পেপ্যাল সাপোর্ট বন্ধ হচ্ছে, জার্মানির ব্যবহারকারীদের জন্য এখনো গুগল ওয়ালেট অ্যাপে পেপ্যাল একটি বৈধ পেমেন্ট অপশন হিসেবে থাকবে। এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্রে পেপ্যাল-ব্র্যান্ডেড ডেবিট কার্ডগুলো গুগল ওয়ালেট অ্যাপে ব্যবহারযোগ্য থাকবে।
গুগল না পেপ্যাল, কার সিদ্ধান্ত?
গুগলের পক্ষ থেকে এই পদক্ষেপের সুনির্দিষ্ট কারণ জানানো হয়নি। তবে প্রযুক্তি মহলে জল্পনা রয়েছে, পেপ্যাল নিজেই তৃতীয় পক্ষের প্ল্যাটফর্মের ওপর নির্ভরতা কমাতে চাইছে। অনেকের মতে, পেপ্যাল তাদের নিজস্ব মোবাইল অ্যাপের ওপর আরও গুরুত্ব দিচ্ছে এবং সরাসরি পেমেন্ট সলিউশন চালুর পরিকল্পনা করছে।
একটি যুগের অবসান
২০১৭ সালে গুগল ওয়ালেটের (তৎকালীন অ্যান্ড্রয়েড পে) সঙ্গে পেপ্যাল ইন্টিগ্রেশন চালু হয়। এটি বিশেষ করে অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীদের জন্য একটি বড় সুবিধা এনে দেয়। অনেক ছোট ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম এটির মাধ্যমে সরাসরি লাভবান হয়।
এখন এই সুবিধা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অনেক ব্যবহারকারীর জন্যই এটি হতে পারে একটি অসুবিধাজনক পরিবর্তন। তবে পরিবর্তন প্রযুক্তি জগতের নিয়মিত সঙ্গী এবং এই সিদ্ধান্ত ভবিষ্যতের আরও নতুন সমাধান বা উদ্ভাবনের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলেও মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। সূত্র: ম্যাশেবল, দ্য ভার্জ, অ্যান্ড্রয়েড অথোরিটি