শেষ পর্যন্ত ভারতের মহাকাশ নিয়ন্ত্রক সংস্থা থেকে চূড়ান্ত অনুমোদন পেয়ে গেল ইলন মাস্কের মালিকানাধীন স্যাটেলাইট ইন্টারনেট কোম্পানি স্টারলিংক।
রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, এই অনুমোদনের মাধ্যমে স্টারলিংক এখন দেশটিতে বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরুর সব ধরণের প্রশাসনিক বাধা অতিক্রম করেছে।
দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান
স্টারলিংক ২০২২ সাল থেকেই ভারতের বাজারে প্রবেশের জন্য লাইসেন্সের অপেক্ষায় ছিল। চলতি বছরের জুন মাসে প্রতিষ্ঠানটি টেলিকম মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে প্রাথমিক অনুমোদন পেলেও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বাধা ছিল মহাকাশ সংস্থার অনুমোদন। অবশেষে সেটিও মিলেছে, যার মাধ্যমে ভারতের আকাশে স্টারলিংকের নতুন যুগের সূচনা হতে যাচ্ছে।
প্রতিযোগিতা জমছে স্যাটেলাইট ইন্টারনেট বাজারে
ভারতে স্টারলিংক হবে তৃতীয় স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান। এর আগে ফ্রান্সভিত্তিক ইউটেলস্যাটের ওয়ানওয়েব এবং ভারতের নিজস্ব রিলায়েন্স জিও সেবা শুরু করেছে। এদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নামছে স্টারলিংক, যার প্রধান শক্তি হলো-বিশ্বজুড়ে সক্রিয় ও দ্রুত বিস্তারযোগ্য লো-আর্থ-অরবিট (LEO) স্যাটেলাইটের নেটওয়ার্ক।
পরবর্তী ধাপ কী?
অনুমোদন পেলেও স্টারলিংকের সামনে এখনো কিছু গুরুত্বপূর্ণ ধাপ রয়েছে:
>> স্পেকট্রাম বরাদ্দ
>> গ্রাউন্ড অবকাঠামো (গ্রাউন্ড স্টেশন) তৈরি
>> নিরাপত্তা যাচাই ও পরীক্ষণ
এই ধাপগুলো সফলভাবে সম্পন্ন করলেই ভারতের সাধারণ জনগণ স্টারলিংকের দ্রুতগতির স্যাটেলাইট ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ পাবে।
মাস্ক বনাম মুকেশ: সরকারের অবস্থান স্পষ্ট
স্টারলিংকের ভারতে প্রবেশ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই বিতর্ক ছিল, বিশেষ করে স্পেকট্রাম বরাদ্দ নিয়ে ইলন মাস্ক ও ভারতের শীর্ষ ধনী মুকেশ আম্বানির মালিকানাধীন জিওর মধ্যে। জিও চেয়েছিল নিলাম পদ্ধতিতে স্পেকট্রাম বরাদ্দ, আর মাস্ক চেয়েছিলেন তা বিনা মূল্যে বা লো-কস্ট লাইসেন্সিংয়ে দেওয়া হোক। শেষ পর্যন্ত ভারত সরকার মাস্কের অবস্থানকেই সমর্থন জানিয়েছে।
স্টারলিংকের ভারতীয় বাজারে প্রবেশ শুধু প্রযুক্তিগত নয়, কৌশলগতভাবেও গুরুত্বপূর্ণ এক পদক্ষেপ। এটি ভারতের গ্রামীণ ও দূরবর্তী অঞ্চলে উচ্চগতির ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দিতে সহায়ক হবে, যেখানে প্রচলিত ব্রডব্যান্ড এখনও দুর্লভ। একইসঙ্গে এটি ভারতের টেলিকম ও স্পেস সেক্টরে নতুন প্রতিযোগিতা ও উদ্ভাবনের পথও খুলে দেবে। সূত্র: রয়টার্স