২০৩০ সাল নাগাদ ৩ লাখ টেকসই কর্মসংস্থান তৈরিতে কাজ করছে বাক্কো  

প্রকাশ: রবিবার, ২২ জুন, ২০২৫
https://www.techvoice24.com/assets/images/logoIcon/logo.png নিজস্ব প্রতিবেদক
https://www.techvoice24.com/assets/images/logoIcon/logo.png
  ছবি: সংগৃহীত

নানা আয়োজনে শেষ হলো বিপিও সামিট বাংলাদেশ ২০২৫। রাজধানীর সেনাপ্রাঙ্গণে দেশের বিপিও খাতের এই সম্মেলন শনিবার শুরু হয়ে চলে রবিবার পর্যন্ত।

তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি অধিদপ্তর এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বিজনেস প্রোমোশন কাউন্সিলের সহযোগিতায় সামিটটি আয়োজন করে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কনট্যাক্ট সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিং (বাক্কো)।

সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী। তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি অধিদপ্তরের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবুর রহমান, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (পূর্ব) ড. মু. নজরুল ইসলাম, আইসিটি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবু সাঈদ এবং বাক্কো সভাপতি তানভীর ইব্রাহীম ও সাধারণ সম্পাদক ফয়সল আলিম।

 অনুষ্ঠানের প্রারম্ভিক আলোচনায় বাক্কো সভাপতি তানভীর ইব্রাহীম বলেন, “বাক্কো বর্তমানে ৪৩০-এর অধিক সদস্য নিয়ে দেশের বিপিও শিল্পে নেতৃত্ব দিচ্ছে। এ পর্যন্ত আমরা ৮৫ হাজারের বেশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছি এবং বার্ষিক ৮৫ কোটি ডলারের বেশি রাজস্ব অর্জন করছি। আমাদের লক্ষ্য হলো, ২০৩০ সালের মধ্যে ৩ লাখ টেকসই কর্মসংস্থান ও ৫০০ কোটি ডলার রপ্তানি আয় নিশ্চিত করা, যা অর্জনে বাক্কো তার বলিষ্ঠ প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখছে।”

বিপিও শিল্পে সরকারের ইতিবাচক মনোভাব ব্যক্ত করে অনুষ্ঠানের সভাপতি আইসিটি সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী বলেন, “বিপিও শিল্পের অগ্রযাত্রা আমাদের প্রযুক্তিনির্ভর অর্থনীতির অন্যতম স্তম্ভ হয়ে উঠছে। এই খাতের বিকাশে সরকার ও শিল্পখাতের সমন্বিত প্রচেষ্টা আরও জোরদার হবে। তরুণদের তথ্যপ্রযুক্তি জগতে যুক্ত করতে হলে তাঁদের হাতে সঠিক দিকনির্দেশনা ও প্রশিক্ষণ পৌঁছে দিতে হবে। বিপিও সামিট সে সুযোগটিই তৈরি করে দিয়েছে।’’

বিপিও সামিটের নানা আয়োজন নিয়ে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এবারের সামিটে বিপিও খাতের রূপান্তরের পাশাপাশি উদ্ভাবনের গতিপথ তুলে ধরা হয়েছে। দুই দিনব্যাপী এই আয়োজনে ৩০টির বেশি দেশি-বিদেশি আইটিইএস বা বিপিও প্রতিষ্ঠান তাদের সেবা ও পণ্য প্রদর্শনের সুযোগ পায়।

বিপিও খাতের সামগ্রিক অগ্রগতি, প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন ও ব্যবসায়িক সম্ভাবনা নিয়ে আয়োজন করা হয় নয়টি সেমিনার ও কর্মশালা, যেখানে ৮৬ জন তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ, করপোরেট নেতৃবৃন্দ ও সরকারের উচ্চপদস্থ প্রতিনিধিগণ বক্তা হিসেবে অংশ নেন।

একাধিক এক্সপো জোন এবং এক্সপেরিয়েন্স জোনে দর্শনার্থীরা আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের সুযোগ পেয়েছেন। উল্লেখযোগ্য এক্সপেরিয়েন্স জোনগুলোর মধ্যে ছিল স্টারলিংক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট পরিষেবা, জুলাই অভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে নির্মিত অগমেনটেড ও ভার্চুয়াল রিয়েলিটি অভিজ্ঞতা, উন্নতমানের ড্রোন ও সাবমেরিন প্রযুক্তি এবং রোবট প্রদর্শনী।

তরুণদের জন্য ক্যারিয়ার কাউন্সেলিং ও চাকরি মেলা ছিল সামিটের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আয়োজন। বিপিও খাতে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ কর্মশালার আয়োজন ছিল। ফ্রিল্যান্সারদের সমস্যা, সফলতা ও ভবিষ্যৎ পথনকশা নিয়েও আয়োজন করা হয় পৃথক সেমিনার। এই খাতকে আরও সুসংগঠিত ও প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার বার্তা ছিল সামিটে।

নীতিমালা সংশোধন ও খাতভিত্তিক নীতিনির্ধারণ নিয়েও হয় বিশেষ পলিসি সংলাপ। এই সেশনে আউটসোর্সিং শিল্পের বিকাশে প্রয়োজনীয় নীতিগত সংস্কারের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। সামিটে কর্মক্ষেত্রে নারীবিষয়ক সেমিনারে নারীর নেতৃত্ব, নিরাপদ পরিবেশ এবং সমান সুযোগের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়।

সামিটে আরো আয়োজন করা হয় ব্যাংক, মোবাইল আর্থিক সেবা ও আন্তর্জাতিক পেমেন্ট গেটওয়ের ভূমিকা এবং বৈশ্বিক অংশীদারত্ব ও আউটসোর্সিংয়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে একাধিক সেমিনার।

এবারের সামিটের কৌশলগত অংশীদার ছিল বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। সহযোগী সংগঠন হিসেবে ছিল বাংলাদেশ আইসিটি জার্নালিস্ট ফোরাম (বিআইজেএফ) ও টেকনোলজি মিডিয়া গিল্ড বাংলাদেশ (টিএমজিবি)।

image

আপনার মতামত দিন