আজকের দুনিয়ায় প্রযুক্তির যে দিগ্বিজয় চলছে, তার অন্যতম চাবিকাঠি হলো ইন্টারনেট অব থিংস (আইওটি)। সহজভাবে বললে, এটি এমন এক প্রযুক্তি, যেখানে ফ্রিজ, গাড়ি, ঘড়ি, লাইট, ক্যামেরা এমনকি কৃষিযন্ত্রপাতিও ইন্টারনেটের সঙ্গে সংযুক্ত থাকে এবং একে অন্যের সঙ্গে তথ্য আদান-প্রদান করে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজ করে।
বাড়ছে জনপ্রিয়তা, বাড়ছে সংখ্যা
জীবনকে আরও সহজ, স্মার্ট ও স্বয়ংক্রিয় করে তুলতে আইওটি-এর জনপ্রিয়তা দ্রুত বাড়ছে। জার্মানভিত্তিক বিশ্লেষণ প্ল্যাটফর্ম স্ট্যাটিস্টার মতে,
>> ২০২৫ সালে বিশ্বে প্রায় ২ হাজার কোটি আইওটি ডিভাইস থাকবে
>> ২০৩৪ সালের মধ্যে সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে ৪ হাজার কোটিরও বেশি!
এই প্রবৃদ্ধির নেতৃত্বে থাকবে চীন, যেখানে সাধারণ মানুষই ব্যবহার করবেন প্রায় ৭৫০ কোটির বেশি ডিভাইস।
কোথা থেকে শুরু?
আইওটি-র যাত্রা শুরু হয় বেশ মজারভাবে। ১৯৮০ দশকে কার্নেগি মেলন ইউনিভার্সিটির কিছু শিক্ষার্থী এমন একটি টোস্টার বানান, যা নেটওয়ার্কের মাধ্যমে দূর থেকে নিয়ন্ত্রণ করা যেত। তখন থেকেই যন্ত্রকে "স্মার্ট" করার যাত্রা শুরু।
১৯৯৯ সালে কেভিন অ্যাশটন, এমআইটির অটো আইডি সেন্টারের সহপ্রতিষ্ঠাতা, প্রথম ‘ইন্টারনেট অব থিংস’ পরিভাষাটি ব্যবহার করেন। তিনিই বলে গিয়েছিলেন, "আইওটি আমাদের জীবন ও কাজের ধরনকে বদলে দিতে পারে।" আজ তা বাস্তবেই হচ্ছে।
কোথায় ব্যবহার হচ্ছে?
বর্তমানে আইওটি সবচেয়ে বেশি দেখা যায় আমাদের হাতের কাছের ডিভাইসেই:
>> স্মার্টফোন
>> স্মার্টওয়াচ
>> স্মার্ট হোম ডিভাইস
স্ট্যাটিস্টার তথ্য বলছে, ২০২৫ সালে প্রায় ৬০% আইওটি ডিভাইস থাকবে ভোক্তাপণ্য বিভাগে, এবং এই প্রবণতা আগামী দশকেও বজায় থাকবে।
শুধু ব্যক্তিগত ডিভাইসই নয়, শিল্প, কৃষি, পরিবহন, বিদ্যুৎ, পানি সরবরাহ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, খুচরা ব্যবসা ও সরকারি খাতেও আইওটি ডিভাইসের ব্যবহার দ্রুত বাড়ছে।
কত বড় বাজার?
গবেষণা প্রতিষ্ঠান ট্রান্সফর্মা ইনসাইটস জানায়,
>>২০১৯ সালে আইওটি খাতের বৈশ্বিক আকার ছিল প্রায় ৪৬৫ বিলিয়ন ডলার
>>২০৩০ সালের মধ্যে তা বেড়ে দাঁড়াবে ১.৫ ট্রিলিয়ন ডলারে!
আইওটি এখন আর কেবল ভবিষ্যতের কথা নয়, এটি এখনকার বাস্তবতা। মানুষ ও যন্ত্রের সমন্বয়ে গড়ে ওঠা এই বিশাল নেটওয়ার্ক আমাদের জীবনকে দিচ্ছে নতুন গতি, নতুন দিশা। সূত্র: স্ট্যাটিস্টা