বিশ্বজুড়ে বাণিজ্যনীতির পরিবর্তন, রাজনৈতিক টানাপোড়েন আর বাড়তে থাকা আমদানি শুল্ক-এই তিনের চাপে প্রযুক্তিপণ্য নির্মাতা প্রতিষ্ঠান লজিটেক তাদের অন্যতম বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কোম্পানিটি এখন চীন থেকে ধীরে ধীরে উৎপাদন সরিয়ে নিচ্ছে ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড, তাইওয়ান, মালয়েশিয়া এবং মেক্সিকোর মতো দেশে।
কেন চীন ছাড়ছে লজিটেক?
মূল কারণ: যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক নীতি। বিশেষ করে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সময় থেকে শুরু হওয়া উচ্চ শুল্ক নীতির কারণে চীনে উৎপাদিত পণ্যের উপর আমদানি কর বেড়েছে প্রায় ১৪৫% পর্যন্ত। এতে করে লজিটেকের পণ্যের উৎপাদন খরচ বেড়ে যায়, যা সরাসরি কোম্পানির মুনাফা ও মার্কেট প্রাইসিংয়ের উপর প্রভাব ফেলছে।
সিইও’র ভাষ্যে সংকল্প স্পষ্ট
লজিটেকের সিইও হান্নেকে ফেবার বলেছেন, তারা বাণিজ্যিক প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলায় সক্রিয় পদক্ষেপ নিচ্ছেন। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রেই তাদের ৩৫% বিক্রি হয়, তাই মার্কেট ধরে রাখতে কৌশলগতভাবে উৎপাদন স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
কোথায় যাচ্ছে উৎপাদন?
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রি হওয়া লজিটেক পণ্যের প্রায় ৪০% চীনে তৈরি হয়। তবে ২০২৫ সালের মধ্যে চীন থেকে আসা পণ্যের পরিমাণ ১০% এর নিচে নামিয়ে আনার পরিকল্পনা রয়েছে।
নতুন গন্তব্যগুলো হলো:
>>ভিয়েতনাম
>> থাইল্যান্ড
>> তাইওয়ান
>> মালয়েশিয়া
>> মেক্সিকো
এই দেশগুলোতে লজিটেকের কন্ট্রাক্ট ম্যানুফ্যাকচারিং পার্টনার রয়েছে, যারা স্থানীয়ভাবে উৎপাদন চালু রাখতে সাহায্য করছে।
বিশ্বব্যাপী সরবরাহ চেইনের নতুন মানচিত্র
লজিটেকের এই পদক্ষেপ বিশ্বজুড়ে উৎপাদনভিত্তিক কোম্পানিগুলোর একটি চলমান প্রবণতার অংশ। শুধু লজিটেক নয়, বহু আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড এখন চীনের বিকল্প খুঁজছে-উৎপাদন ব্যয় কমানো ও ভৌগোলিক বৈচিত্র্য আনার জন্য।
লজিটেকের এই সিদ্ধান্ত কেবল একটি কোম্পানির কৌশলগত পরিবর্তন নয়, বরং বৈশ্বিক অর্থনীতিতে ‘চীন-পরবর্তী উৎপাদন যুগ’-এর ইঙ্গিত। সময়ের সঙ্গে ব্যবসায়িক সিদ্ধান্ত যেমন পাল্টায়, তেমনি উৎপাদনের ভৌগোলিক অবস্থানও হয়ে উঠছে স্ট্র্যাটেজিক অস্ত্র। সূত্র: রয়টার্স