এজেন্টিক এআইয়ের বাস্তবতা: ২০২৭ সালের মধ্যে বাতিল হতে পারে ৪০% প্রকল্প

প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন, ২০২৫
https://www.techvoice24.com/assets/images/logoIcon/logo.png টেকভয়েস২৪  ডেস্ক
https://www.techvoice24.com/assets/images/logoIcon/logo.png
  ছবি: সংগৃহীত

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির অগ্রগতি বিশ্বজুড়ে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করছে। তারই একটি শাখা হচ্ছে এজেন্টিক এআই-এমন এক ধরনের প্রযুক্তি, যা নিজে নিজেই সিদ্ধান্ত নিতে পারে এবং নির্দিষ্ট কাজ সম্পন্ন করতে পারে।

এই প্রযুক্তি নিয়ে প্রচুর আলোচনা হলেও বাস্তবতা কিন্তু সব সময় আশাব্যঞ্জক নয়। সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণায় এ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান গার্টনার (Gartner)।

 কী বলছে গার্টনার?
গার্টনারের এক পূর্বাভাস অনুযায়ী-২০২৭ সালের মধ্যে ৪০ শতাংশের বেশি এজেন্টিক এআই প্রকল্প বাতিল হয়ে যাবে।

এর মূল কারণ দুটি

>>ব্যয় বাড়ছে- এসব প্রযুক্তি বাস্তবায়নে অনেক বেশি খরচ হচ্ছে

>>ব্যবসায়িক সুবিধা স্পষ্ট নয়- প্রতিষ্ঠানগুলো বুঝে উঠতে পারছে না, এর থেকে সত্যিকারের লাভ কীভাবে পাওয়া যাবে

এই তথ্য প্রকাশ করেছে রয়টার্স, বিশ্বখ্যাত বার্তা সংস্থা।

 এজেন্টিক এআই কী?
সংক্ষেপে বললে, এজেন্টিক এআই (Agentic AI) হলো এমন একটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবস্থা, যা নিজের সিদ্ধান্তে কাজ করতে পারে। যেমন,

>> আপনি একটা কাজের নির্দেশনা দিলেন

>>এরপর রোবট বা সফটওয়্যার নিজে-নিজেই সেই কাজ কীভাবে করবে, সেটা ঠিক করে ফেলল

>>কাজটা শেষ করেও আপনাকে জানিয়ে দিল

এটা শুধু চ্যাটবট বা অ্যাসিস্ট্যান্টের মতো নয়-বরং এটি আরও বেশি স্বাধীন ও কৌশলী।

 কিন্তু বাস্তবতায় কোথায় সমস্যা?
গার্টনারের বিশ্লেষক অনুশ্রী বর্মা বলেন, “এই প্রযুক্তি এখনো বেশিরভাগ জায়গায় প্রাথমিক স্তরে রয়েছে। বাস্তবে জটিল সমস্যার সমাধান দিতে এখনো প্রস্তুত নয়।”

তিনি আরও জানান, অনেক প্রতিষ্ঠান এখনো পরিপক্বতা অর্জন করেনি। তাই এজেন্টিক এআই ব্যবহার করে বড় ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে তাদের মধ্যে দ্বিধা রয়েছে।

প্রচারণা বনাম বাস্তবতা
গার্টনারের রিপোর্টে আরও একটি চমকপ্রদ তথ্য উঠে এসেছে- হাজার হাজার প্রতিষ্ঠান নিজেদের এজেন্টিক এআই সরবরাহকারী দাবি করলেও, প্রকৃত অর্থে যোগ্য প্রতিষ্ঠান মাত্র ১৩০টি।

অনেক কোম্পানি কেবল চ্যাটবট বা সাধারণ এআই অ্যাসিস্ট্যান্টকে নতুন নামে পরিচিত করিয়ে মার্কেটিং করছে। কিন্তু এগুলোর প্রকৃত সিদ্ধান্ত গ্রহণ বা কাজের ক্ষমতা সীমিত।

ভবিষ্যত কেমন?
সব নেতিবাচক খবরের মাঝেও আশার আলো রয়েছে।

গার্টনারের মতে, ২০২৮ সালের মধ্যে এজেন্টিক এআই প্রযুক্তি দিয়ে প্রতিদিনের অন্তত ১৫ শতাংশ সিদ্ধান্ত স্বয়ংক্রিয়ভাবে নেওয়া যাবে।

এ ছাড়া-

>> ৩৩% সফটওয়্যার অ্যাপ্লিকেশনেই এজেন্টিক এআই সংযুক্ত থাকবে
>>  ব্যবসা ও প্রযুক্তির সংযোগ আরও গভীর হবে
>> সময় ও শ্রম বাঁচিয়ে কাজের গতি বাড়াবে

এজেন্টিক এআই প্রযুক্তি নতুন, সম্ভাবনাময় এবং জটিল। এখনই হয়তো এটি সবাইকে বাস্তব সুফল দিতে পারছে না, কিন্তু ভবিষ্যতে এর সম্ভাবনা অনেক। প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাই বিনিয়োগ করার আগে বাস্তব চাহিদা, প্রযুক্তির পরিপক্বতা এবং দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার দিকেই মনোযোগ দিতে হবে।

এটি যেমন প্রযুক্তিবিদ ও গবেষকদের জন্য চ্যালেঞ্জ, তেমনি নতুন উদ্যোগ ও উদ্ভাবনের জন্য এক বিশাল ক্ষেত্র। সূত্র: গার্টনার

image

আপনার মতামত দিন