অস্ট্রেলিয়ায় আবাসন সংকট চমক আকার ধারণ করেছে। দেশটিতে গড় বাড়ির দাম প্রথমবারের মতো ১০ লাখ অস্ট্রেলীয় ডলার বা ৬ লাখ ৫২ হাজার মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। এ পরিস্থিতিতে সাশ্রয়ী বাড়ির খোঁজে থাকা ক্রেতারা পড়েছেন বিপাকে।
অস্ট্রেলিয়ান ব্যুরো অব স্ট্যাটিসটিকসের (এবিএস) তথ্যানুযায়ী, দেশটিতে মার্চে শেষ হওয়া প্রান্তিকে বাড়ির গড় মূল্য ছিল ১০ লাখ ২ হাজার ৫০০ অস্ট্রেলীয় ডলার, যা আগের প্রান্তিকের তুলনায় দশমিক ৭ শতাংশ বেশি।
বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল কিছু শহরের অবস্থান অস্ট্রেলিয়ায়। এখন সেসব শহরে অনেক অস্ট্রেলীয় নাগরিকের জন্য বাড়ি কেনা বা ভাড়া নেয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে উঠেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ সংকটের পেছনে রয়েছে আবাসনের ঘাটতি, জনসংখ্যা বৃদ্ধি, আবাসন খাতে বিনিয়োগকারীদের জন্য কর সুবিধা এবং সামাজিক আবাসনে অপর্যাপ্ত বিনিয়োগ।
গড় দামের দিক থেকে শীর্ষে রয়েছে অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে জনবহুল প্রদেশ নিউ সাউথ ওয়েলস (এনএসডব্লিউ), যেখানে বাড়ির গড় মূল্য ১২ লাখ অস্ট্রেলীয় ডলার। এর পরই রয়েছে কুইন্সল্যান্ড, এ প্রদেশে বাড়ির গড় মূল্য ৯ লাখ ৪৫ হাজার অস্ট্রেলীয় ডলার।
অবশ্য জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে সব রাজ্য ও অঞ্চলে বাড়ির দাম বাড়লেও বার্ষিক বৃদ্ধির হার ধীর হয়ে আসছে। এবিএসের প্রতিবেদন অনুসারে, এ সময় অস্ট্রেলিয়ায় বাড়ির মূল্যবৃদ্ধির প্রধান চালক ছিল পশ্চিম অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়া ও কুইন্সল্যান্ড।
এদিকে গবেষণা সংস্থা অস্ট্রেলিয়ান হাউজিং অ্যান্ড আরবান রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্রধান মাইকেল ফাদারিংহ্যাম জানান, ১০ লাখ অস্ট্রেলীয় ডলারের এ মূল্যসীমা অতিক্রম তাকে অবাক করেনি। এটি অনেক বছর ধরে চলমান অর্থনৈতিক প্রবণতার ফল। কারণ অস্ট্রেলিয়ায় মজুরির তুলনায় বাড়ির দাম অনেক বেশি হারে বেড়েছে এবং এতে পুরো আবাসন ব্যবস্থা ‘প্রচণ্ড চাপের মুখে’ রয়েছে।
মাইকেল ফাদারিংহ্যাম বলেন, ‘আবাসন খাতের এ অবস্থা শুধু নিম্ন আয়ের পরিবারের জন্য নয়, মধ্যম আয়ের পরিবারের জন্যও এখন একটি বড় সমস্যা।’
গত মাসে অনুষ্ঠিত অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় নির্বাচনে দ্বিতীয়বারের মতো জয় পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ। এ নির্বাচনে আবাসন সংকট ছিল প্রধান ইস্যু। গত মঙ্গলবার অ্যান্থনি আলবানিজ জানান, তার সরকার ডেভেলপারদের জন্য নিয়মকানুন আরো সহজ করতে চায়। সূত্র: বিবিসি।