চীন-যুক্তরাষ্ট্র প্রযুক্তি উত্তেজনার মধ্যেই বড় এক চমক আনলো হুয়াওয়ে। বহুদিন ধরেই নিজেদের তৈরি অপারেটিং সিস্টেম হারমনিওএস নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠানটি এবার বাজারে এনেছে হারমনিওএস ৫-চালিত প্রথম ল্যাপটপ।
যেখানে বিশ্বের বেশিরভাগ ল্যাপটপ এখনো মাইক্রোসফট উইন্ডোজে নির্ভরশীল, সেখানে হুয়াওয়ের এই পদক্ষেপ শুধু প্রযুক্তিগত নয়, বরং ভূরাজনৈতিক এক কৌশলগত বার্তাও বহন করে।
উইন্ডোজ নয়, হারমনিওএস
যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার ফলে হুয়াওয়ে গুগলের অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহার করতে পারছে না বহু বছর ধরে। ফলে বিকল্প খুঁজতে গিয়ে তারা তৈরি করে নিজস্ব অপারেটিং সিস্টেম হারমনিওএস, যা এতদিন ছিল মূলত স্মার্টফোন ও ট্যাবলেট কেন্দ্রীক। এবার সেটিই জায়গা করে নিচ্ছে ল্যাপটপের জগতে।
এআই থাকবে প্রতিটি ক্লিকে
হারমনিওএস ৫-এর অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো এআই একীভূত ইন্টারফেস। হুয়াওয়ের নিজস্ব এআই অ্যাসিস্ট্যান্ট সিলিয়া এর মাধ্যমে আপনি মুহূর্তেই তৈরি করতে পারবেন ডকুমেন্ট, প্রেজেন্টেশন স্লাইড কিংবা ই-মেইলের সংক্ষিপ্তসার। এমনকি অন্যান্য অ্যাপও কণ্ঠস্বরেই নিয়ন্ত্রণযোগ্য।
সিস্টেমের সঙ্গে বিল্ট-ইন হিসেবে থাকবে জনপ্রিয় চীনা অফিস অ্যাপ ডব্লিউপিএস অফিস, এবং টিম সহযোগিতার জন্য ডিংটক অ্যাপ। হারমনিওএস-এর স্মার্টফোন অ্যাপগুলো ল্যাপটপেও ব্যবহারযোগ্য হবে, যা তৈরি করবে একটি ক্রস-প্ল্যাটফর্ম এক্সপেরিয়েন্স।
তবে উইন্ডোজ সফটওয়্যারের জায়গা নেই
হুয়াওয়ে স্পষ্ট করে জানিয়েছে-এই ল্যাপটপে উইন্ডোজ অ্যাপ্লিকেশন বা সফটওয়্যার চলবে না। শুধুমাত্র হারমনিওএস ভিত্তিক অ্যাপ ব্যবহারের সুযোগ থাকবে। ইন্টারফেস ডিজাইনে কিছুটা মিল থাকলেও এটি একটি স্বতন্ত্র সিস্টেম, যা মূলত চীনা ব্যবহারকারীদের জন্য ডিজাইন করা।
এখনই কেবল চীনের বাজারে
ল্যাপটপটির হার্ডওয়্যার স্পেসিফিকেশন, দাম বা নাম এখনো প্রকাশ করেনি হুয়াওয়ে। তবে জানা গেছে, এই মাসের শেষেই এটি চীনের বাজারে বিক্রি শুরু হবে। আন্তর্জাতিক বাজারে আসার কোনো পরিকল্পনা আপাতত নেই।
প্রযুক্তির স্বাধীনতা, না বিচ্ছিন্নতা?
হুয়াওয়ের এই পদক্ষেপ নিঃসন্দেহে চীনের প্রযুক্তিগত আত্মনির্ভরতার পথকে আরও মজবুত করছে। তবে প্রশ্ন রয়ে যায়-একটি নতুন অপারেটিং সিস্টেম বিশ্বব্যাপী কতটা গ্রহণযোগ্যতা পাবে? প্রযুক্তি বিশ্বে হারমনিওএস কি সত্যিই উইন্ডোজের বিকল্প হতে পারবে, নাকি এটি চীনের ভেতরেই সীমাবদ্ধ থাকবে?